বিশ্ব অর্থনীতি এখন ধুঁকছে। রয়টার্সের বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আকাশচুম্বী শুল্ক আরোপের কারণে এই স্থবির অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কেউই ঠিক জানে না, কখন এই সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে। তাহলে কি ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ ভুল সিদ্ধান্ত ছিল? সময়ই তা বলে দেবে। তবে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই একমত যে হোয়াইট হাউসের চাপানো শুল্ক বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিচ্ছে, যে প্রবৃদ্ধি বহু দশক ধরে মোটামুটি নির্ভরযোগ্য আর তুলনামূলকভাবে মুক্ত বাণিজ্যের ওপর ভর করেই দাঁড়িয়ে ছিল।
এই প্রেক্ষাপটে, বড় বড় বহুজাতিক কোম্পানি আর ছোট ছোট ই-কমার্স ব্যবসাগুলো একেবারে কাঁচি চালিয়ে নিজেদের বিক্রির পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান আবার চাকরি ছাঁটাইয়ের আগাম সতর্কতা দিয়ে বসেছে, আর আগের দাপুটে ব্যবসায়িক পরিকল্পনাগুলোতেও এখন একরকম নমনীয়তা এসেছে।
এদিকে, বৈশ্বিক বাজারে এক ধরনের অন্ধকারের ছায়া নেমে এসেছে। বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিগুলো আর সেই পুরনো উচ্চ জিডিপির স্বপ্ন দেখছে না। মার্কেটজুড়ে একটাই অনিশ্চয়তা—যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের মধ্যকার চলমান শুল্ক যুদ্ধ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দ্বন্দ্বই এখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা।
ফরাসি ব্যাংক বিএনপি পারিবাসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইসাবেল মাতেওস ই লাগো ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে “বিশ্বের জন্য এক বিরাট ধাক্কা” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, এই বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে এখন মার্কিন কোম্পানিগুলো আগের চেয়ে অনেক কম কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে। এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠান তো কর্মী বাড়ানোর পরিকল্পনাই পুরোপুরি বাতিল করে দিয়েছে।
অন্যান্য বড় অর্থনীতিগুলোও কম কষ্টে নেই। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে চীনে শিল্প উৎপাদন রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ১৬ মাসে এত দ্রুত পতন আর হয়নি। যুক্তরাজ্যের অবস্থাও ভালো নয়—দেশটির রপ্তানির পরিমাণ গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে। অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য এক “চাহিদার ধাক্কা” হিসেবে দেখছেন। তাঁদের সতর্কতা—এই নীতি শুধু আমদানি মূল্যের ওপর চাপ বাড়াবে না, অন্য দেশগুলোতেও ব্যবসায়িক কার্যক্রমে টানাপোড়েন তৈরি করবে।
*The market analysis posted here is meant to increase your awareness, but not to give instructions to make a trade.