চীনা কর্তৃপক্ষ কিন্তু বসে নেই। তারা খুঁজে বের করেছে কীভাবে মার্কিন শুল্ককে পাশ কাটিয়ে যাওয়া যায়। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, চীনা রপ্তানিকারকরা এখন যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় দেশের মাধ্যমে পণ্য পাঠাচ্ছে। এভাবে কার্যত তারা নিজেদের রপ্তানিকৃত পণ্য “পাচার” করছে। সন্দেহ নেই, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত আমদানি শুল্কই এই কৌশলের পেছনে মূল অনুপ্রেরণা।
পণ্যের আসল উৎস লুকাতে চীনা কোম্পানিগুলো অন্য দেশের উৎপাদন বলেই লেবেল লাগাচ্ছে। ফলে চীনে গড়ে উঠেছে এক ধরনের প্রতিষ্ঠান যারা পণ্যের পুনঃনিবন্ধন সেবা দিচ্ছে। তারা রপ্তানিকারকদের মালয়েশিয়ার মতো তৃতীয় দেশের মাধ্যমে পণ্য পাঠাতে সাহায্য করছে, যেখানে নতুন ‘সার্টিফিকেট অফ অরিজিন’ দেওয়া হচ্ছে, তারপর তা আমেরিকায় রওনা দিচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোও এখন এই ট্রানজিট হাবে পরিণত হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কাস্টমস এজেন্সি জানিয়েছে, “সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করার ঘটনা হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির পরিবর্তনের কারণে নানা বিধিনিষেধ এড়াতে এটা করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, চীনা পণ্যের গায়ে ভুলভাবে উৎস হিসেবে ‘দক্ষিণ কোরিয়া’ লেখা রয়েছে।”
এর পাশাপাশি, চীন থেকে আসা পণ্যের ঢল আশপাশের দেশগুলোকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে—তারা এখন ভয় পাচ্ছে, যেন তারা আবার ‘রি-এক্সপোর্ট হাব’ হয়ে না পড়ে। এর জবাবে, ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পণ্যের উৎস এবং উপকরণের কড়া নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছে। তাদের লক্ষ্য—ভুয়া সার্টিফিকেট অফ অরিজিন দেওয়া ঠেকানো।
বর্তমানে, চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের মোট শুল্ক ১৪৫%-এ দাঁড়িয়েছে। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীনও ১২৫% প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেছে, পাশাপাশি কিছু আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক তুলে নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, চীন তাদের বাণিজ্য অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে—তারা যেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চাপের কাছে নতিস্বীকার না করে, যার উদ্দেশ্য এই চলমান ওয়াশিংটন-বেইজিং সংঘাতের মাঝে বেইজিংকে আলাদা করে ফেলা।
*The market analysis posted here is meant to increase your awareness, but not to give instructions to make a trade.